শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০৭:২৯ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
বাংলাবাজার খবর অনলাইন নিউজ পোর্টালের জন্য দেশের প্রতিটি জেলা উপজেলা ও বিভাগীয় শহরে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। journalist.hadi@gmail.com এবং newsbbazer@gmail.com এই ইমেইল দুই কপি ছবি ও দুইটি নমুনা প্রতিবেদনসহ জীবনবৃত্তান্ত পাঠাতে পারেন। বিভাগীয় শহরে ব্যুরো অফিস দেওয়া হবে।

রাজশাহীতে ক্ষতির আশঙ্কায় খামারিরা

ক’দিন পরই ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। কিন্তু করোনা মহামারীর প্রকোপে রাজশাহীর হাটগুলোতে পর্যাপ্ত পশু আমদানি হলেও এবার কোরবানির পশু কেনার তোড়জোড় নেই।

দেশের অন্যতম পশুর হাট রাজশাহীর সিটি হাটে হাজার হাজার গরু-মহিষ উঠলেও ক্রেতার অভাবে জমে উঠেনি কেনাবেচা। করোনার ভয়ে ক্রেতারা হাটে না যাওয়ায় খামারিরা বিপুল ক্ষতির আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। অনলাইনে ও অন্যান্য মাধ্যমে যোগাযোগ করে তারা পশু বিক্রির চেষ্টা করছেন। তেমন সাড়া পাচ্ছেন না। প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য মতে, রাজশাহীতে ছোট-বড় মিলে ৬৫ হাজার খামারি আছেন। তাদের হাতে বিক্রিযোগ্য দুই লক্ষাধিক কোরবানির গরু মজুদ আছে।

ঈদ ঘনিয়ে আসায় কয়েক দিনে রাজশাহীর সিটি হাটে বিক্রির জন্য হাজার হাজার পশু তুলছেন খামারি ও গরু ব্যবসায়ীরা। সারা বছর পুষে বড় করা গরুগুলো তারা এই কোরবানি মৌসুমে বিক্রির জন্য রেখেছেন। এখন সিটি হাটে গরু নিয়ে দুই-তিন দিন অপেক্ষার পরও ক্রেতা পাচ্ছেন না অনেক খামারি। ফলে আর্থিক ক্ষতির দুশ্চিন্তায় দিন গুণছেন। তবুও আশা, শেষ মুহূর্তের ক্রেতা আসবে।

রফিকুল ইসলাম নামে এক খামারি বলেন, বর্তমানে পশুর খাদ্যের চড়া মূল্য। এছাড়া অন্যান্য খরচ মিলে গরু পালনে ব্যয় বেড়েছে। তবে করোনার প্রকোপ না থাকলে এই সময়ে হাটে ক্রেতা সমাগম বেশি হতো। আর এতেই তারা পুষিয়ে নিতে পারতেন। কিন্তু এ বছর হাটে বিপুল সংখ্যক কোরবানির পশু উঠলেও রোববার পর্যন্ত ক্রেতার দেখা সেভাবে পাচ্ছেন না খামারিরা।

পবার মৌসুমি গরু ব্যবসায়ী শাহীন আলম বলেন, কোরবানিযোগ্য তার ১৫টি বড় গরু আছে। এমন আকারের গরু প্রতি বছর রাজশাহী সিটি হাটে কিনে বেপারিরা ঢাকা ও চট্টগ্রামে চালান করতেন। বড় গরু স্থানীয়ভাবে বিক্রি হয় না। কিন্তু এবার করোনার কারণে এসব বড় গরু কেনায় আগ্রহী ক্রেতা বা বেপারির দেখা মিলছে না। পরিস্থিতি যা তাতে হয়তো অর্ধেক দামেই এসব গরু বিক্রি করতে হবে। কারণ কোরবানিতে এসব গরু বিক্রি না হলে পরে আর বিক্রি করা যাবে না। ফলে তাদের ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।

রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. অন্তিম কুমার সরকার জানান, রাজশাহী জেলায় কোরবানির ঈদের জন্য প্রায় দুই লাখ গবাদি পশুর প্রয়োজন হয়। জেলায় এবার প্রায় সাড়ে তিন লাখ কোরবানিযোগ্য পশু মজুদ রয়েছে। প্রতি বছর ঈদ মৌসুমে রাজশাহী থেকে দেড় লাখের বেশি কোরবানির পশু ঢাকা, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী অঞ্চলে চালান হয়। কিন্তু এবার করোনার কারণে বাইরের বেপারিদের আনাগোনা রাজশাহীতে বেশ কম। এতে গরু বিক্রি নিয়ে খামারিরা বেশ চিন্তায় আছেন। তাই আমরা পরামর্শ দিচ্ছি বড় গরু বা খামারে বড় করা গরু যেন অনলাইনে বিক্রির চেষ্টা করেন তারা। এতে যদি তারা গরুর ন্যায্য মুল্যটা পান।

এদিকে হাটে ক্রেতা সংকটের কারণ হিসেবে রাজশাহী সিটি হাট মালিক আতিকুর রহমান কালু বলেন, করোনায় মানুষের আয়-উপার্জন প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। মধ্যম শ্রেণির মানুষই সাধারণত ঈদে গরু কোরবানি দেন ভাগাভাগি করে। এবার তাদের হাতে টাকা নেই। ফলে হাটে আসছেন না। যারা প্রতি ঈদে একাধিক গরু কোরবানি দেন তারাও হাটে অনুপস্থিত। কিছু মানুষ আসছেন, তারা কম দামের ছোট গরু কেনার চেষ্টা করছেন। বড় গরু তেমন বিক্রি নেই বললেই চলে। কালু আরও বলেন, প্রতি বছর তার হাটে শুধু ঈদ উপলক্ষে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ গরু কেনাবেচা হয়। আর সিটি হাট থেকে দেড় লক্ষাধিক কোরবানির পশু চালান হয় দেশের বিভিন্ন জেলায়। এবার পরিস্থিতি বেশ খারাপ। শেষাবধি কেনাবেচার পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে কাল অথবা পরশু পর্যন্ত দেখলে বোঝা যাবে।

Spread the love

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন

© All rights reserved © 2019
Design & Developed BY আইটি হোস্ট সেবা